।। বাক্‌ ১১৮।। রঞ্জিত সিংহ ।।






স্টাফড মোষের মাথা কিংবা আমি


ঘন তরল আগুনে টকটকে অন্ধকারে বহুক্ষণ ডুবে গেছে সূর্য।
বড় একমাথা কচু গাছ, - ভাদ্রের ভিতরে আধডোবা আশ্বিনী, ভরণী,
মৃগশিরা, পুনর্বসু— প্রকৃতি ও হিরণ্যগর্ভের দল। নদীর স্রোতগে
দ্রুত ভাসমান শিমুলফুলের রক্ত, মানুষের মুখ,
এবং অঙ্গুষ্ঠপরিমিত অন্তরাত্মা।

ইড়া পিঙ্গলার মধ্যবর্তী নাড়ীগুলো প্রতিদিন মজে যাচ্ছে।
এস্থান ক্রমেই জনমানববর্জিত। ভয়ংকর শূন্যতার চাপ এখানে এলেই
অনুভব করা যায়।
উলটেপালটে ছন্নছাড়া হয়ে গেছে কাংস, কপিশ, মনসো জবীয়ো শব্দাবলি।
নরদ্বারে ফাটল জেগেছে। এ বর্ষায় বাঁচানো যাবে না।

সমস্ত সকাল, গোটা রাত্রি একটা বিকলাঙ্গ লোক
মেঝের অপর পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। তাকে জাগানো যায় না।
টার্টার-জমাট দাঁতগুলো জেগে আছে অল্পখোলা দু ঠোঁটের ভাঁজে।
দেখলেই ভয় হয়,
বুঝি এইবার একজন মাংসাশী শ্বাপদ জেগে উঠে
বাকি জীবন বীভৎস যৌনসনে বসে যাবে।
লোমশ শরীর থেকে বিজবিজে ঘাম ঝরবে, দুর্গন্ধ ছড়াবে, মাছিরা উড়বে।
ও স্নান জানবে না। শৌচ ভুলে যাবে।

একটা মোষের মাথা স্টাফ করে আমি বসবার ঘরে
চওড়া বাইশ ইঞ্চি দেয়ালে টাঙিয়ে রেখেছি সেদিন।
আমাকে কেউ যে বলেছিল ভয়, ঘৃনা, রিরংসাকে দিয়ে
গোটা প্রাগৈতিহাসিকতাকে টেনে আনা যায়
ঘরের আসবারে সময়কে ভেঙে গুড়ো করে
স্বচ্ছন্দে ছড়ানো যায় পুবে ও পশ্চিমে !
কে যে আমায় শেখাল, তরল আগুনে টকটকে অন্ধকারে
একটা রক্তঝরা মোষের মাথায় আমি অস্ত যেতে লাগলাম !
ইড়া পিঙ্গলার মধ্যবর্তী জায়গাটায়
শব্দবমি মুছে মুছে
হাতের তেলোর দাগ...
হাতের তেলোর শিমুল রক্তের দাগ...

রক্তে আমি অস্ত যাচ্ছি।



চিত্রঋণ  Bill Mayer

2 comments: